ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি: বর্তমান সকল তরুণীদের পছন্দের একটি প্রফেশন ফ্রিল্যান্সিং। নতুন যারা অনলাইনে কাজ করতে চায়, তাদের সবার প্রথম পছন্দের থাকে ফ্রিল্যান্সিং করা। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং পেশা জনপ্রিয়তা অনেক বেড়ে গেছে। এছাড়াও ভবিষ্যতে ফ্রিল্যান্সিং পেশা আরো চারপাশে ছড়িয়ে পড়বে।
ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসার আগে, আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে হবে। কারণ ফ্রিল্যান্সিং অনেকগুলো সেক্টর রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং কাজের কোন অভাব নাই। কিন্তু আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ গুলো আগে ভালোভাবে জানতে হবে। আজকে আমরা ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি ও ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন তা জানবো।
ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি
আপনাদের আমি আগেই বলেছি, ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে হাজার রকমের কাজ রয়েছে। আপনি একটা সেক্টরে ভালোভাবে কাজ শিখলেন, কিন্তু সেই কাজের মার্কেটপ্লেসে কোনো চাহিদা নেই। এরকম সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শিখে আপনার কোন লাভ হবে না। এজন্য আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি এটা আগে জানতে হবে।
আপনি কিছুক্ষণের জন্য মনে করুন, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট শিখতে চাচ্ছেন। কিন্তু আপনি অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট শেখার পর জানতে পারলেন, ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসে অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট কাজের চাহিদা অনেক কম। তাহলে আপনার অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট কাজ শিখা কোন লাভ হলো না। আপনি অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য নূন্যতম ৩ মাস সময় নষ্ট করেছেন। এছাড়াও এই কাজ শেখার জন্য আপনার অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে।
অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট সেক্টরকে আমি উদাহরণস্বরূপ আপনাদের সামনে আলোচনা করলাম। এজন্য আপনাকে এমন একটি সেক্টর বেছে নিতে হবে, যে সেক্টরের কাজের চাহিদা অনেক বেশি। আপনাকে এমন ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের বেছে নিতে হবে, যে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যারা নতুন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে যাচ্ছেন, তাদের প্রশ্ন থাকে, ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি ও ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন।
আপনার যদি মনে এরকম প্রশ্ন আসে, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন পরবর্তী শুধু আপনার জন্য। আজকে আমরা মোট পাঁচটি সেক্টর নিয়ে আলোচনা করবো। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এই ৫ টি সেক্টর অনেক বেশি জনপ্রিয়। এছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসে এই পাঁচটি কাজের চাহিদা অনেক বেশি। চলুন শুরু করা যাক,ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি ও কোন কাজ শিখলে আপনি বেশি টাকা আয় করতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা অনেক সহজ। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজ শিখতে চান, তাহলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে পারেন। এছাড়া অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের কাজ খুব একটা কঠিন না।
নতুন যারা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে যাচ্ছেন, তাদের আমি সাজেশন দেবো, আপনারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং দিয়ে শুরু করতে পারেন। কারণ নতুন যারা ফ্রিল্যান্সিং শিখতে আসে, তাদের মধ্যে ৭০% মানুষের হাতে স্মার্টফোন থাকে। তারা চাই স্মার্টফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার। স্মার্ট ফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের মধ্যে আফিলিয়েট মার্কেটিং অন্যতম।
এছাড়াও আপনি যদি অন্যান্য সেক্টরে কাজ শিখতে চান, তাহলে আপনাকে সর্বনিম্ন পাঁচ মাস সময় দিতে হবে। পাঁচ মাস সময় দেওয়ার পর, আপনার কম্পিউটার থাকতে হবে। আমার পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা খরচ করতে হবে। তারপর আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখতে পারবেন। কিন্তু আপনি যখনই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে চাবেন। তখন আপনার বেশিদিন সময় লাগবে না। এছাড়াও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে বেশি টাকা দিতে হয় না।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার জন্য দুটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এই দুটি প্লাটফর্মে আপনি সম্পূর্ণ বিনামূল্য মার্কেটিং শিখতে পারবেন। গুগল ও ইউটিউব। বর্তমানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার জন্য আপনি ইউটিউব ব্যবহার করতে পারেন। ইউটিউবে মার্কেটিং এর ফুল কোর্স রয়েছে। এছাড়াও google এর মাধ্যমে বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে পারবেন।
আপনার যদি পরিচিত কোন আত্মীয়, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এক্সপার্ট হয়। তাহলে আপনি সেই আত্মীয় নিকট হতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে পারবেন। এছাড়াও আমাদের দেশে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা টাকার বিনিময়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখিয়ে থাকে। আপনি চাইলে এই সকল প্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে পারবেন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন
ফ্রিল্যান্সিং জগতে সবথেকে টপ পজিশনে রয়েছে গ্রাফিক্স ডিজাইন। কারণ গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজের চাহিদা অনেক বেশি। ফ্রিল্যান্সিং জগতের সব থেকে বড় বড় ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্রাইস ফাইভার,আপওয়ার্ক ও freelancer.com এ গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজের চাহিদা অনেক বেশি। একজন ফ্রিল্যান্সার প্রতিমাসে গ্রাফিক্স ডিজাইন করে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করেছে।
আপনি যদি আমাদের প্রশ্ন করেন, ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি, তাহলে আমাদের উত্তর হবে গ্রাফিক্স ডিজাইন। গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজের মধ্যে সবথেকে বেশি জনপ্রিয় লোগো ডিজাইন টি-শার্ট ডিজাইন। এছাড়াও facebook কভার ডিজাইনের জনপ্রিয়তা কম নয়। একজন ব্যবসায়ী যদি একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে।
তাহলে সেই ব্যবসায়ী প্রথমে একটি কোম্পানির লোগো তৈরি করতে হবে। এছাড়াও অনলাইন ব্যবসার মধ্যে ফেসবুক অন্যতম। ফেসবুকে আপনি যদি কমার্স ব্যবসা করতে চান, তাহলে আপনাকে লোগো কভার ফটো ডিজাইন করতে হবে। ফেসবুকের লোগো ও কভার ফটো ডিজাইন করার জন্য, একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার লাগবে।
বর্তমান সময়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ফেসবুকে ব্যবসা করছে। এজন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনের জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে গেছে। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে সফল হতে চান, তাহলে আপনাকে একজন ভালো ডিজাইনার হতে হবে। এখন টাকা ইনকাম করার আগে, আপনাকে ভালোভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে হবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং
বর্তমানে আমরা সকল প্রকার কাজ অনলাইনে করে থাকি। এছাড়াও আমাদের বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো ডিজিটাল মার্কেটার হায়ার করে থাকে। কারণ একটি ই-কমার্স ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য, একজন ডিজিটাল মার্কেটারের ভূমিকা অপরিসীম।
ডিজিটাল মার্কেটিং কাজের কি পরিমাণ চাহিদা রয়েছে,এটা জানার জন্য আপনাকে আপওয়ার্ক ওয়েবসাইটের প্রবেশ করতে হবে। পৃথিবীতে সব থেকে বেশি জনপ্রিয় অনলাইন ইনকাম মার্কেটপ্লেসের মধ্যে আপওয়ার্ক ওয়েবসাইট অন্যতম। এই ওয়েবসাইটে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে ডলার আয় করতে পারেন।
কিন্তু আপনাকে আগে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেক্টর গুলো জানতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর হলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আপনি অনেক ডলার আয় করতে পারবেন। কিন্তু এর জন্য আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখতে হবে।
আপনার যদি ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কিছু টাকা থাকে, তাহলে ভালো একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখতে হবে। কিন্তু বর্তমানে বিনামূল্যে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখতে পারবেন। এজন্য আপনাকে ইউটিউবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কোর্স করতে হবে। youtube এ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে অনেক কোর্স রয়েছে।
ভিডিও এডিটিং
বর্তমানে আমরা ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম এর মধ্যে ফেসবুক ও ইউটিউব ব্যবহার করি। এছাড়াও আমরা অবসর সময় ফেসবুকে সব থেকে বেশি ভিডিও দেখি। আপনার যদি ভিডিও এডিটিং শেখা থাকে, তাহলে একটা ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ খুলতে পারেন। এছাড়াও বর্তমান সময়ে অনলাইনে ভিডিও এডিটিং কাজের চাহিদা অনেক বেশি।
কিন্তু আপনাকে একজন এক্সপার্ট ভিডিও এডিটিং হতে হবে। এক্সপার্ট ভিডিও এডিটিং ছাড়া, অনলাইন থেকে ডলার ইনকাম সম্ভব না। এছাড়াও আপনি যদি নিজস্ব কিভাবে টাকা ইনকাম করতে চান, তাহলে ভিডিও এডিটিং অন্যতম। কারণ আপনি ভিডিও এডিটিং করে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করবেন।
আপনার যদি অ্যানিমেশন কার্টুন তৈরি করার অভিজ্ঞতা থাকে। তাহলে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না। কারণ এনিমেশন কার্টুনের চাহিদা অনেক বেশি। এছাড়াও ইউটিউবে বিভিন্ন অ্যানিমেশন কার্টুন মানুষ বেশি পছন্দ করে। এই কারণে আপনি কার্টুন তৈরিতে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।
উপসংহার
আপনি ইতিমধ্যে,ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি ও ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজ করে বেশি টাকা ইনকাম করতে হয় তা জানতে পেরেছেন। উপরে আমরা মোট চারটি সেক্টর নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনার যদি ফ্রিল্যান্সিং করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে উপরের যেকোনো একটি সেক্টরের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন।
আমাদের অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে, ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে আপনার বেশি টাকা লাগবে না। এছাড়াও সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন। আবার ইউটিউব এর মাধ্যমে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর সকল কোর্স পেয়ে যাবেন। ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি এটা নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে, আমাদের জানাবেন।