বুয়েটে ভর্তির যোগ্যতাঃ বুয়েট হচ্ছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশল সম্পর্কিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি ঢাকা শহরের লালবাগ থানার পলাশী এলাকায় অবস্থিত। কারিগরি শিক্ষা প্রসারের জন্য ১৮৭৬ সালে ঢাকা সার্ভে স্কুল নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি পরবর্তীতে আহসানউল্লাহ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয় এ পরিণত করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে এর নাম হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর ইচ্ছা থাকে বুয়েটে পড়াশোনা করার। কারণ বুয়েট বাংলাদেশের প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ। যেখানে একজন শিক্ষার্থীর প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন তৈরি হয়। কিন্তু নতুন যে সকল শিক্ষার্থী বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার অংশগ্রহণ করতে চায়,তাদের মনে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন থাকে।
বুয়েটে ভর্তির যোগ্যতা,বুয়েটে পড়ার খরচ,বুয়েটে ভর্তি হতে কত টাকা লাগে ও বুয়েটে চান্স পাওয়ার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে আপনার জানা দরকার। কারন আপনি যদি এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আগে থেকেই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানেন তাহলে ভর্তি পরীক্ষার সময় কোন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। চলুন দেখে নেই বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
বুয়েটে ভর্তির যোগ্যতা
বাংলাদেশের সব থেকে জনপ্রিয় প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় হল বুয়েট। ছোট থেকে যে সকল শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে। তাদের কিন্তু প্রথম টার্গেট থাকে বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করা। কারণ আপনি ভর্তি পরীক্ষায় যদি কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করতে না পারেন। তাহলে কিন্তু বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন কখনো পূরণ হবে না।
এই কারণে আপনি যদি এসএসসি বা এইচএসসি বিষয়ে বর্তমান পড়াশোনা করেন। তাহলে অবশ্যই আগে থেকে বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। এইজন্য প্রত্যেকটির শিক্ষার্থীর বুয়েটে ভর্তির যোগ্যতা কি কি তা জানা দরকার। চলুন এ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য দেখে নেই।
বুয়েটে ভর্তির যোগ্যতা ২০২৩ঃ প্রার্থীকে বাংলাদেশের যেকোন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে গেড পদ্ধতিতে বিজ্ঞান বিভাগে (গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন সহ) ৫.০০ এর স্কেলে ন্যূনতম জিপিএ ৪.০০ পেয়ে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট/দাখিল/সমমান পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। অথবা বিদেশি শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড পেয়ে পাশ করতে হবে।
প্রার্থীকে বাংলাদেশের যেকোন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে উচ্চ মাধ্যমিক/আলীম/ সমমানের পরীক্ষায় গেড পদ্ধতিতে ৫.০০ এর স্কেলে জিপিএ ৫.০০ পাশ করে হবে।
গণিত বিষয়ে ২০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম ১৭০ নম্বর এবং পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয় সমূহে ৪০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম মোট ৩৭২ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক/ আলীম/ সমমানের পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। অথবা বিদেশী শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড/ নম্বর পেয়ে পাশ করতে হবে।
►► আরো পড়ুনঃ
ক্যাডেট কলেজে পড়ার খরচ
►► আরো পড়ুনঃ রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ বেতন
বুয়েটে পড়ার খরচ
বুয়েটে ভর্তির যোগ্যতা গুলো জানার পর,এখন আপনাকে খরচ সম্পর্কে কিন্তু জানতে হবে। আমাদের মাঝে অনেকের ভুল ধারণা আছে বুয়েটে পড়ার খরচ সম্পর্কে। আমরা অনেকেই মনে করি বুয়েটে পড়াশোনা করতে অনেক বেশি টাকা লাগবে।
বুয়েট যেহেতু সরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয় সেক্ষেত্রে আপনার পড়াশোনার খরচ অনেক কম হবে। সব খরচ নিয়ে প্রায় চার লাখ টাকা লাগতে পারে। এছাড়াও বুয়েটে পড়ার খরচ নির্ভর করবে মূলত শিক্ষার্থীর উপরে। দেখা যায় একেক জন শিক্ষার্থীর খরচ এক এক রকম হয়ে থাকে।
বুয়েটে ভর্তি হতে কত টাকা লাগে
বুয়েটে ভর্তি হতে আপনাকে বেশি টাকা খরচ করতে হবে না। শুধু ভর্তি ফ্রি দিতে হবে। ক’ গ্রুপে (প্রকৌশল ও বিভাগসমূহ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পন বিভাগ) আবেদন, প্রাক্-নির্বাচনী ও মূল ভর্তি বাবদ ১ হাজার এবং ‘খ’ গ্রুপে (প্রকৌশল ও বিভাগসমূহ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পন বিভাগ ও স্থাপত্য বিভাগে) ১ হাজার ২০০ টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ফি দিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
বুয়েটে চান্স পাওয়ার উপায়
বুয়েটের চান্স পাওয়ার জন্য আপনার সর্বপ্রথম কাজ হলো মনোযোগ সহকারে পড়ালেখা করা। শুধু পড়াশোনা করলেই হবে না আপনাকে রুটিন মাফিক পড়াশোনা করতে হবে। বিশেষ করে আপনি এসএসসি পরীক্ষা শেষ করার পরে,কোন একটি ভালো কোচিং সেন্টারে ভর্তি হবেন। অথবা বর্তমান সময়ে বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে অনলাইনে অনেক কোর্স রয়েছে।
আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেই কোর্সগুলো করতে পারেন। মজার কথা হল এমন অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা দিনরাত ২৪ ঘন্টা পড়াশোনা করে কিন্তু পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারে না। আমাদের সময় এমন অনেক শিক্ষার্থী ছিল যাদের এমন অবস্থা হয়েছে।
এর মূল কারণ হলো পরীক্ষার জন্য প্রপার প্রস্তুতি না নেওয়া। আপনাকে শুধু পাঠ্য বই পড়লেই হবে না,বইয়ের বাইরে অনেক কিছু জানতে হবে। যাতে আপনার সৃজনশীল জ্ঞান থাকি। এইভাবে আপনি যদি বুয়েট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেন। তাহলে অবশ্যই আপনি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে পারেন।
বুয়েট পরীক্ষার মানববন্ধন
আপনার যদি বুয়েটে ভর্তির যোগ্যতা থাকে, তাহলে অবশ্যই কত মার্কের পরীক্ষা হবে তা জানা দরকার। গ্রুপ ক এবং গ্রুপ খ প্রশ্নসংখ্যা পূর্ণমান ১০০ এর মধ্যে গণিত ৩৪, পদার্থ বিজ্ঞান ৩৩,রসায়ন ৩৩।
বুয়েটে মোট আসন সংখ্য
আসলে প্রত্যেক বছর বুয়েটে আসন সংখ্যা পরিবর্তন করা হয়। এবার মোট ১ হাজার ২৭৫ আসনে বুয়েট স্নাতক ১ম বর্ষে ভর্তি করা হবে। এর মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর জন্য ৪টি আসন সংরক্ষিত থাকবে।
পরিশেষে কিছু কথা
এই ছিল আজকে বুয়েটে ভর্তির যোগ্যতা সম্পর্কে আমাদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা। যারা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ প্রকৌশলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক তাদের আজকের আর্টিকেল অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করার জন্য আপনার আলাদা কিছু যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এছাড়াও আপনাকে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
এই দুইটা শর্ত যদি আপনি মানতে পারেন,তাহলে খুব সহজে বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে। শুধু পড়াশোনা করলে হবে না অবশ্যই আপনাকে রুটিন মাফিক ও টপিজ basic পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। তাহলে দেখবেন আপনার স্বপ্ন একদিন পূরণ হবে। বুয়েটে ভর্তির যোগ্যতা সম্পর্কে যদি কোন মন্তব্য থাকে অবশ্যই কমেন্ট করুন।
আচছালামুআলাইকুম। বুয়েটে ভর্তির জন্য সাধারণ গনিতসহ উচ্চতর গনিত নাকি শুধু উচ্চতর গনিতে ৫ পয়েন্ট থাকলে চলবে। আমার ছেলে SSC তে সাধারন গনিতে ৭৭ এবং ´চ্চতর গনিতে ৯৮ নাম্বার পেয়েছে। সে কি অাবেদন করতে পারবে না?