পাইলট হওয়ার যোগ্যতা
পাইলট হওয়ার যোগ্যতা– প্রত্যেকটি মানুষই ছোট থেকে স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে নিজের ক্যারিয়ারকে খুব ভালো একটি স্থানে নিয়ে যেতে। কারো কারো আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন থাকে। তবে বেশিরভাগ মানুষের স্বপ্ন থাকে আকাশে উড়ে বেড়ায়। আকাশের বুকে উড়ে বেড়াবে। কিন্তু সঠিক নির্দেশ নির্দেশনা না পাওয়ার কারণে তাদের আর এই ইচ্ছা সম্পূর্ণ হয়ে ওঠে না। হ্যাঁ আমি বলছি পাইলট হওয়ার কথা।
আপনার যদি পাইলট হয় স্বপ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই পাইলট হওয়ার যোগ্যতা,পাইলট হওয়ার উচ্চতা,বাংলাদেশে পাইলট হতে কত টাকা খরচ হয় ও সরকারি পাইলট হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা পাইলট হওয়ার জন্য কি কি করতে হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি আজকে পুরোটা সময় এই আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
পাইলট হওয়ার যোগ্যতা
আপনি নিশ্চয়ই বড় হয়ে পাইলট হতে চান। এই কারণে পাইলট হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। ছোটবেলা থেকে আমাদের সকলের কিন্তু আকাশে উড়ার ইচ্ছা থাকে। তবে বিভিন্ন কারণে-অকারণে আমাদের এই স্বপ্নটা পূরণ হয় না। তবে আপনি যদি একটু আগে থেকেই পাইলট হওয়ার বিষয়ে সঠিক তথ্য পেয়ে যান। এবং সে অনুযায়ী পড়াশোনা করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনি একদিন পাইলট হতে পারবেন।
পাইলট হতে গেলে কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। কিছু সঠিক দিক নির্দেশনার দরকার। আগে থেকে পাইলট হওয়ার জন্য দিক-নির্দেশনা জানা থাকলে পাইলট হওয়ার স্বপ্নটা পূরণ হয়ে যেতেও পারে। তাই আমি আজ আলোচনা করব পাইলট হওয়ার যোগ্যতা কি এবং কিভাবে পাইলট হওয়া যায়।
পাইলট হওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা
পাইলট হওয়ার জন্য সর্বপ্রথম আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশ বিমান সহ যেকোনো বিমানের পাইলট হতে গেলে, আপনাকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে নূন্যতম জিপিএ ২.৫০ অর্জন করতে হবে।
মূলত এইচএসসি পাস করার পর আপনি যখন অনার্সে ভর্তি হবেন। তখন পাইলট হওয়ার জন্য আবেদন করবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এর পাশাপাশি অবশ্যই শারীরিকভাবে ফিট থাকতে হবে।
আরো পড়ুনঃ বিনা খরচে বিমানের পাইলট হওয়ার সুযোগ
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের পাইলট হতে কত টাকা লাগবে
পাইলট হওয়ার উচ্চতা
পাইলট হওয়ার যোগ্যতা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো উচ্চতা। অর্থাৎ পাইলট হওয়ার জন্য উচ্চতা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পাইলট হওয়ার জন্য উচ্চতা হতে হবে ন্যূনতম ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। এছাড়াও আবেদন করার সময় আপনার বয়স সর্বনিম্ন ২৫ বছর থাকতে হবে।
বাংলাদেশে পাইলট হতে কত টাকা খরচ হয়
বাংলাদেশের পাইলট হতে কত টাকা লাগবে এটা নির্ভর করবে আপনি কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে পাইলট হওয়ার জন্য কোর্স করবেন। সিভিল এভিয়েশন একাডেমি ট্রেনিং সেন্টার, বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টার, বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি অ্যান্ড ফ্লাই এভিয়েশন লিমিটেড, আরিরাং এভিয়েশন লিমিটেড ও গ্যালাক্সি ফ্লাইং একাডেমি লিমিটেড।
বাইরের কোনো দেশ থেকেও করা যাবে। ফ্লায়িং একাডেমি থেকে মোট দেড়-দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন করা যাবে এ কোর্স। সব মিলিয়ে খরচ পড়বে ৩০ থেকে ৩২ লাখ টাকার মতো। বিভিন্ন বিমান সংস্থা বিভিন্ন সময় পাইলট নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ফার্স্ট অফিসার বা কো-পাইলট হিসেবে প্রতিষ্ঠানভেদে মাসিক বেতন হতে পারে ৭৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকা।
বাংলাদেশে পাইলটের বেতন কত
বাণিজ্যিক পাইলটদের মাসিক বেতন হয়না। অর্থাৎ,তারা ফ্লাইট প্রতি টাকা পান নির্ভর করে দূরত্বের উপর তবে বাংলাদেশি পাইলটদের মাসিক আয় ২/৩ লক্ষ টাকার মধ্যে। এছাড়াও যারা অভিজ্ঞ পাইলট তাদের বেতন তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হয়।
সরকারি পাইলট হওয়ার উপায়
মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে বিমানের পাইলট হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে দেশের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব খরচে পাইলট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগ থেকে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
যেসব মেধাবী বাংলাদেশি তরুণ বিজ্ঞান বিভাগে গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞানসহ এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ অথবা এ লেভেলে নূন্যতম দুই বিষয়ে (গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞান) গ্রেড-বি পেয়েছেন তারা এক্ষেত্রে আবেদন করতে পারবেন।
স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতকরাও আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের সময় প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ২৫ বছর হতে হবে। উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি নূন্যতম। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স আরও জানায়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সহযোগিতায় ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রার্থী নির্বাচনী সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। প্রাথমিকভাবে সকল টেস্টে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে ৫০জনকে নির্বাচিত করা হবে।
নির্বাচিতদের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের খরচে বিশ্বের খ্যাতনামা ফ্লাইং একাডেমিতে পাঠানো হবে। দুই বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্নের পর উত্তীর্ণ পাইলটগণ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে যোগদান করতে পারবেন। স্টুডেন্ট পাইলটদের নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে আইকিউ টেস্ট, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য পরীক্ষা।
এ বছরে সরকারিভাবে বিনামূল্যে পাইলট হওয়ার আবেদন শেষ হয়ে গেছে। আপনি পরবর্তী বছরের জন্য অপেক্ষা করতে পারেন। এছাড়াও তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। যোগাযোগ usbair.com।
তথ্যসূত্র: ঢাকা টাইমস
অবশেষে কিছু কথা
এই ছিল আজকে আমাদের পাইলট হওয়ার যোগ্যতা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। আশা করি, যাতে ছোট থেকে পাইলট হওয়ার স্বপ্ন তারা উপরের যোগ্যতা গুলো অনুযায়ী পড়াশোনা করতে হবে। তাহলে আপনি ইনশাল্লাহ বড় হয়ে পাইলট হতে পারবেন। পাইলট হওয়ার সাথে সাথে আপনি আকাশ পথে উড়ে বেড়াতে পারেন।
প্রকৃতপক্ষে পাইলট হওয়ার যোগ্যতা দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। পাইলট হওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পাইলট যেন উচ্চতা। মূলত এই দুটি শর্ত পূরণ করতে পারলে আপনি খুব সহজে বিমান চালাতে পারেন। আজকের আর্টিকেল কেমন লাগলো তা কমেন্ট করতে পারেন। আপনার কোন বন্ধুর যদি পাইলট হওয়ার ইচ্ছা থাকে তাহলে তার কাছে এই পোস্ট শেয়ার করতে পারেন। পাইলট হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকলে মন্তব্য করুন।